আপনার রক্তদান, বাঁচাতে পারে একটি প্রাণ
রক্তদানের মতো মহৎ কাজে এগিয়ে আসতে নিচের “Join Now” বাটনে ক্লিক করে ফরমটি পূরণ করুন।
সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষের মহামূল্যবান জীবন ও দেহ সুরক্ষায় রক্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য তরল উপাদান। একজন ব্যক্তির প্রয়োজনে রক্ত দেয়া একটি মহৎ কাজ। সচেতনতার অভাবে এবং কিছু ভুল ধারণার কারণে আমরা অনেকেই রক্তদানের মতো মহৎ কাজ এবং দুর্লভ সুযোগ থেকে নিজেদের বঞ্চিত করছি প্রতিনিয়ত। অথচ সুস্থ্য প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হিসেবে আমরা প্রতি ১২০ দিন পর কোন রকম শারীরিক ক্ষতি ছাড়াই রক্ত দিয়ে একজন মানুষের জীবন বাঁচাতে ভূমিকা রাখতে পারি। নিয়মিত ব্যবধানে ভেঙ্গে যাওয়া রক্তকণিকা আমাদের শরীরে কোন কাজে আসে না অথচ এই রক্ত অন্যকে দিলে তার জন্য তা হতে পারে অমূল্য।
রক্ত দেওয়ার কিছু উপকারীতা সম্পর্কে জেনে নিনঃ
নিয়মিত রক্তদাতাদের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
বছরে তিনবার রক্ত দান করলে শরীরে নতুন লোহিত কণিকার উৎপাদনের হার বেড়ে যায়। এটি অস্থিমজ্জাকে সক্রিয় রাখে। রক্তের ঘাটতি দ্রুত পূরণ হয়।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
রক্তদানে যে ক্যালরি খরচ হয় তা ওজন কমাতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শরীরে হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, জন্ডিস, ম্যালেরিয়া, সিফিলিস, এইচআইভি বা এইডসের মতো বড় কোনো রোগ থাকলে তা বিনামূল্যে জানা যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
শরীরের ভারসাম্য ঠিক থাকে।
এটি একজন ব্যক্তির জীবন বাঁচাতে পারে।
মৌলভীবাজারের কিছু ব্লাড ডোনেশন গ্রুপ ও প্রয়োজনীয় নাম্বার/ লিংক নিচে দেওয়া হল। রক্তের বিশেষ প্রয়োজনে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
ব্লাড ডোনার্স ফোরাম,মৌলভীবাজার।
যোগাযোগঃ 01911-100121
………………………………………………..
যোগাযোগঃ 01712-371858, 01717-093103
………………………………………………..
যোগাযোগঃ 01711-176367, 01735-991218
এছাড়াও জরুরী প্রয়োজনে আমাদের সাইটে প্রকাশিত হাসপাতাল বা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
মনে রাখবেন, আপনার রোগী যদি গর্ভবতী থাকেন, তাহলে আগে থেকেই দুইজন ডোনারের সাথে কথা বলে রাখবেন।
এবার জেনে নিন কারা রক্ত দিয়ে পারবেন এবং কারা পারবেন না।
যারা রক্ত দিতে পারবেনঃ
১৮ থেকে ৫২ বছর বয়সী যেকোনো শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ও সক্ষম ব্যক্তি রক্ত দিতে পারবেন।
পুরুষের ওজন ৪৮ কেজি, মহিলার ওজন ৪৫ কেজি হলে রক্ত দেওয়া যায়।
কোনো ব্যক্তি একবার রক্ত দেওয়ার ৪ মাস পর আবার রক্ত দিতে পারবেন।
যারা রক্ত দেবেন নাঃ
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম (পুরুষদের ন্যূনতম ১২ গ্রাম/ডেসিলিটার এবং নারীদের ন্যূনতম ১১ গ্রাম/ডেসিলিটার হতে হবে) থাকলে।
রক্তচাপ ও শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক না থাকলে রক্ত দেওয়া ওই মুহূর্তে উচিত নয়।
শ্বাস–প্রশ্বাসজনিত রোগ, যেমন হাঁপানি বা অ্যাজমা।
রক্তবাহিত রোগ যেমন, হেপাটাইটিস বি বা সি, জন্ডিস, এইডস, সিফিলিস, গনোরিয়া, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি থাকলে রক্ত দেওয়া যাবে না। তা ছাড়া টাইফয়েড, ডায়াবেটিস, চর্মরোগ, বাতজ্বর, হৃদ্রোগ থাকলেও রক্ত দেওয়া উচিত নয়।
নারীদের মধ্যে যাঁরা অন্তঃসত্ত্বা ও যাঁদের ঋতুস্রাব চলছে তাঁরা রক্ত দেবেন না, সন্তান জন্মদানের এক বছরের মধ্যেও না।
যাঁরা কিছু ওষুধ সেবন করছেন, যেমন, কেমোথেরাপি, হরমোন থেরাপি, অ্যান্টিবায়োটিক ইত্যাদি তাঁরা সে সময় রক্ত দেবেন না।
যাঁদের বিগত ৬ মাসের মধ্যে বড় কোনো দুর্ঘটনা বা অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁরা রক্ত দেবেন না।
রক্তদানের পর যে বিষয়গুলি মনে রাখা প্রয়োজনঃ
রক্তদানের পর লাগিয়ে দেওয়া স্ট্রিপ ব্যান্ডেজ অন্তত কয়েক ঘণ্টা রাখুন।
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন।
ত্বকের র্যাশ এড়ানোর জন্য ব্যান্ডেজ খোলার পর ভালো করে সাবান পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
ওই দিন ভারী কিছু তুলবেন না বা এক্সারসাইজ না করাই ভালো।
যদি সূঁচ ফোটানো জায়গা থেকে রক্তপাত হতে থাকে তা হলে ক্ষতের উপর চাপ দিয়ে হাত সোজা করে ৫-১০ মিনিট উপরের দিকে তুলে রাখুন, যতক্ষণ না রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে।
রক্ত দেওয়ার পর মাথা ঘুরলে বা কোনও রকম শারীরিক অস্বস্তি হলে কিছু ক্ষণ বসে থাকুন বা শুয়ে থাকুন। যতক্ষণ না সুস্থ বোধ করছেন।
পরিশেষে বলা যায়,
রক্তদান অনেকটা বিশেষ একটি প্রকার সেবা। এটি মানুষের জীবনের জন্য একটি অনেক মৌলিক সমর্থন। রক্তদানের মাধ্যমে অনেক মানুষের জীবন বাঁচানো যায়।
রক্তদান একটি সহজ প্রক্রিয়া যা সাধারণত ১৫-২০ মিনিট বা তার কম সময় নেয়। প্রত্যেকের রক্তের গ্রুপ এবং রেসাস ফ্যাক্টর বিভিন্ন হয়, তাই অন্যের জীবন বাঁচানোর জন্য আপনার রক্ত দরকার হতে পারে।
রক্ত দানের প্রক্রিয়া অনেকটা একটি বিশেষ সেবা দেয়া সমান যেখানে সামান্য সময় দিয়ে আপনি অন্যদের জীবন বাঁচাতে পারেন। রক্তদান করা আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। তাছাড়া রক্তদানের মাধ্যমে আপনি আপনার শরীরে কোন ইনফেকশন আছে কি-না তা সম্পর্কেও জেনে নিতে পারবেন।
Leave a Reply